থিসিস সুপারভাইজার পাননি যাকে চেয়েছিলেন? এই কৌশল আপনার জন্য
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে থিসিস সুপারভাইজার নির্ধারণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যবহারিক তিন স্তরের কৌশল।
বাংলাদেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিশেষত আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে, থিসিস সুপারভাইজার নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা সবসময় তাদের পছন্দ অনুযায়ী সুপারভাইজার পান না।
কেন এমন হয়?
বাস্তবতা বুঝতে হবে
লটারি, সিজিপিএ অথবা বিভাগীয় নির্দিষ্ট নিয়মের মাধ্যমে সুপারভাইজার বরাদ্দ করা হয়, যেখানে শিক্ষার্থীর গবেষণা আগ্রহ ও ক্যারিয়ার লক্ষ্যের সাথে সুপারভাইজার মিলানোর সুযোগ সীমিত থাকতে পারে।
তবে এই ব্যবস্থার পেছনে বিভাগের বাস্তব সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যা উপেক্ষা করা সম্ভব নয়:
- শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত
- শিক্ষকদের নির্দিষ্ট গবেষণা ক্ষেত্র
- প্রশাসনিক দায়িত্ব এবং সময়ের সীমাবদ্ধতা
এসব কারণে প্রতিটি শিক্ষার্থীর পছন্দমতো সুপারভাইজার নিয়োগ দেওয়া বাস্তবসম্মত নয়।
তাহলে সমাধান কী?
এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের উচিত বিভাগীয় নীতির বিরুদ্ধে না গিয়ে বরং সৃজনশীল ও সহযোগিতামূলক পন্থা অবলম্বন করা।
তিন স্তরের কৌশল
স্তর ১: বর্তমান পরিস্থিতির সর্বোত্তম ব্যবহার
প্রথমেই নির্ধারিত সুপারভাইজারের সাথে দেখা করুন। কীভাবে আপনার আগ্রহকে তার বিশেষজ্ঞতার সাথে সমন্বয় করা যায় তা নিয়ে খোলামেলা কথা বলুন।
শুধু বিষয়বস্তু নয়, গবেষণা পদ্ধতি শেখায় মনোযোগ দিন। লিটারেচার রিভিউ, সমালোচনামূলক চিন্তা, একাডেমিক রাইটিং—এই দক্ষতা যেকোনো ক্ষেত্রে কাজে লাগবে।
স্তর ২: সমান্তরাল সুযোগ সৃষ্টি
আপনি চাইলে বেশ কিছু বিকল্প পথ খুঁজে নিতে পারেন:
- আপনার পছন্দের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শিক্ষককে সহ-সুপারভাইজার হিসেবে যুক্ত করার অনুরোধ করুন
- একাডেমিক থিসিসের বাইরে অন্য প্রফেসরের সাথে আলাদা কাজের সুযোগ খুঁজে দেখতে পারেন
- বিভাগের রিসার্চ গ্রুপ বা ল্যাবে যুক্ত হতে পারেন
স্তর ৩: বিভাগের বাইরে সম্প্রসারণ
এই স্তরে আপনি আরও বিস্তৃত সুযোগ খুঁজতে পারেন:
- অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরদের সাথে সহযোগিতা করুন (দেশীয় বা আন্তর্জাতিক)
- যেসব গবেষকের কাজ আপনাকে আগ্রহী করে তাদের পেশাদার ইমেইল পাঠান (১০-২০% সাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা)
- অনলাইন কোর্স করুন (Coursera, edX, MIT OpenCourseWare) এবং পছন্দের বিষয়ে দক্ষতা বাড়ান
- নিজস্ব প্রজেক্ট করে GitHub/LinkedIn-এ পোর্টফোলিও তৈরি করুন
মূল নীতিমালা
১. দুটি কাজ সমান্তরালে চালান
নির্ধারিত থিসিস পেশাদারিত্বের সাথে সম্পন্ন করুন, পাশাপাশি নিজের আগ্রহের কাজ চালিয়ে যান।
২. বিভাগীয় নীতিকে সম্মান করুন
নিয়মের বিরুদ্ধে যাওয়ার চেষ্টা না করে সৃজনশীল সমাধান খুঁজুন।
৩. সবকিছু নথিবদ্ধ করুন
নিজ উদ্যোগে করা কাজের পোর্টফোলিও তৈরি করতে পারেন—এটি ভবিষ্যতে আপনার সম্পদ হবে।
৪. দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা করুন
৩০-৪০ বছরের ক্যারিয়ারে এই ৬-১২ মাসের থিসিস মাত্র একটি ছোট অধ্যায়।
শেষ কথা
এই সীমাবদ্ধতা আপনাকে শেখাবে স্বনির্ভরতা, নেটওয়ার্কিং এবং মানসিক দৃঢ়তা—যা সৌভাগ্যবান শিক্ষার্থীরা হয়তো কখনও শিখবে না।
চ্যালেঞ্জকে সুযোগে রূপান্তরিত করুন। আপনার থিসিস যাত্রা শুরু হোক আজ থেকেই!